গজারিয়া একটি প্রাচীন জনপদ। ভূ-তাত্বিক বিশ্লেষনে গজারিয়া মূলত বুড়িগঙ্গা ওধলেশ্বরীর মিলিত স্রোত যা শীতলক্ষা ও মেঘনা বাহিত বালিদ্বারা সৃষ্ট ভূখন্ড। খ্রিষ্টীয় সপ্তম শতাব্দিতে রাজা শশাঙ্কের রাজত্ব কালে গজারিয়ার অস্তিত্ব পাওয়া যায়া। গজারিয়া একটি চরাঞ্চল এলাকা। গজারিয়ার বয়স কত তা নির্ণয় করা সহজ সাধ্য নয়। কারণ বছর বছর বালি পড়ে এর উপরি ভাগের ভূ-স্তর নবায়িত হচ্ছে।ফলে এর মাটি কোন কোন এলাকায় এখনো স্থায়ী রূপ লাভ করেনি। বহু এলাকা নদীভাংগনে বিলীন প্রায়। তার পরেও কিছু কিছু এলাকার স্থায়ীত্ব বিদ্যমান । এরমধ্যে রয়েছে ভরেরচর, বাউশিয়া, ইমামপুর ও টেংগারচর ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম।পরবর্তীতে গজারিয়া,গুয়াগাছিয়া, হোসেন্দী, বালুয়াকান্দি এবং চর বাউশিয়া স্থায়ীত্ব লাভ করে। নদী বিধৌত পলি দ্বারা এ ভূমি গঠিত বলে এর মাটি খুবই উর্বর। ফলে এখানে সহজেই গজারি জাতীয় সরলবর্গীয় বৃক্ষ জন্মায়। শীত কালে উত্তর সাইবেরীয়া থেকে এক ধরনের রিয়া পাখী খাদ্য অন্বেষনে এ অঞ্চলে আসত। তখন পাখী শিকারের নেশায় অনেক দেশী-বিদেশী পর্যটক নৌ পথে ঘুরে বেড়াত এবং পাখীশিকার করত। গজারি জাতীয় গাছের উপর বসা রিয়া পাখী শিকার বড়ই মজা ও আনন্দের ব্যাপার ছিল। গজারিয়া নাম করনের চল ’পাখি শিকারে গজারিয়া যাই’এ-ভাবে হতে পারে এটা শুধু কল্পনায়। তবে নাম করণের কোন সুস্পষ্ট প্রমান না থাকলেও এলাকায় জনশ্রুতি রয়েছে যে, পর্তুগীজ নাবিকরা এখানে পাখি শিকারের জন্য আসত। মাঝে মধ্যে এ এলাকার জমিদার দের মধ্যে যুদ্ধ বিগ্রহ হত। তখনকার যুগে রাজাদের স্থলপথের একমাত্র বাহন ছিল হাতি।ত্রিপুরা জেলা হতে হাতি এনে দাউদকান্দি এসে তখন নদীদিয়ে হাতি গুলো পারকরে সোনারগাঁও পরগনায় নেওয়া হত। দাউদকান্দি থেকে সোনারগাঁও পর্যন্ত দীর্ঘ নদীপথ। হঠাৎ এই নদীপথে নৌকা ডুবিতে হাতি মারা যায়।এমনি সময় এক পর্তুগীজ ক্যাপ্টেন তার কিছু নাবিক সহ পাখি শিকারের জন্য নদীর পার দিয়ে বেড়াছিলেন। হঠাৎ তাদের নজরে পড়ে নদীতে ভাসমান হাতির উপর এক প্রকার বিরাট পাখি যা বর্তমানে বিলুপ্তপ্রায়।তারা মরাহাতির উপর উড়াউড়ি করছে এবং লম্বা ঠোট দিয়ে হাতির শবদেহ বিচ্ছেদ করছে । শীতকালে সাইবেরীয়া থেকে এখানে খাদ্যের খোঁজে আসত এ পাখীগুলো।হাতি শব্দের প্রতিরুপ-গজা আরঅতিথি পাখীগুলোর নাম রিয়া এ অর্থে গজারিয়া নামে এলাকার নাম করণহয় গজারিয়া।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস